হুমায়ুন কবীর হীরু,ডবলমুরিং (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
করোনা ভাইরাসের ছোবলে সারাবিশ্বের মানুষ দিশেহারা।প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ লাশ হয়ে বিদায় নিচ্ছেন পৃথিবী নামক গ্রহ থেকে।প্রতিটি জনপদের মানুষ এখন আতঙ্কগ্রস্ত।বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট।বন্ধ হয়ে গেছে আয়ের পথ।বাংলাদেশে লকডাউনের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষদেরকে অনাহারে, অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে।মুখ ফুটে না বলা মধ্যবিত্তরাও ভালো নেই।এধরণের সংকটময় মুহূর্তে কিছু মানুষ তাদের মানবিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটিয়ে থাকেন।তেমনি এক ব্যাতিক্রমি তরুণ মানবিক সমাজ সেবক হারুনুর রশীদ রবী।লকডাউনের শুরু থেকেই তার জন্মস্থান উত্তর আগ্রাবাদ দাইয়াপাড়া থেকে শুরু করে সমস্ত ২৪নং ওয়ার্ড এলাকা সহ আশেপাশে অভাবগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে প্রতিদিনই তার সাধ্যমত চেষ্টা করছেন। অনেকটা নীরবে চলছে তার এই মানবিক কার্যক্রম। মার্চের শেষে লকডাউনের শুরুর দিকে অভাবগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি,সেই থেকে অবিরাম ছুটছে তার সহযোগিতার হাত।সাহায্য গ্রহীতার পরিচয় গোপন রাখবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রচার বিমুখ এই সেবক কখনো দিনে কখনো রাতের বেলায় ছুটে চলার ছবি ফেইসবুকে প্রচার না করে যাদেরকে সহায়তা করছেন তাদের পরিচয় গোপন রাখছেন।প্রথমদিকে প্রতিদিন ৩০/৪০ টি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিলেও এখন প্রতিদিন বেড়েছে তার সংখ্যা। যারাই তার কাছে সহযোগিতা চেয়েছে তাদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন অভলীলায়।খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাল,ডাল,তেল,আলু,পেয়াজ, ছোলা সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও নগদ অর্থ।এরই মধ্যে রমজানে পথে পথে দাঁড়িয়ে ফ্রি ইফতারি বিতরণ এবং কি গভীর রাতে অসহায় পরিবারে ঘরে ঘরে পোছে দিয়েছেন সেহেরি।এব্যাপারে জানতে চাইলে রবি বলেন,বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষ কতটুকু কষ্টে আছে তা উপলব্ধি করি যখন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো থেকে ফোন আসে।মানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার মধ্যেই রয়েছে জীবনের সার্থকতা।এতে মানুষের মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটে। তরুণ ব্যাবসায়ী রবি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আমিন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক শহীদ মৌলভী সৈয়দ আহম্মেদর একনিষ্ঠ সহচর ছিলেন এবং শেখ ফজলুল হক মনির অত্যান্ত স্নেহভাজন হিসেবে পরিচিত। তার পিতা ১৯৭৫ সালে চট্টগ্রামে প্রথম বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে সক্ষিয় অংশগ্রহণ করেন এবং স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে পলাতক ফেরারী জীবন যাপন করেন।নিরবে সহযোগিতার কথা প্রকাশ না করার ব্যাপারে হারুনুর রশীদ রবী বলেন, কারন এটা ত্রাণ নয় এবং প্রচারের জন্য নয়। এটা উপহার, তাই ছবি তোলা নিষেধ এবং পরিচয় গোপন রাখা হচ্ছে।২৬ মার্চ থেকে আগ্রাবাদ সহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে ছিন্নমূল মানুষের মাঝে মাস্ক, সাবান, স্যানিটাইজার, হ্যান্ড গ্লাভস বিতরণ করেছেন তিনি।তিনি আরো বলেন যারা লোকলজ্জার ভয়ে কারও কাছে কিছু বলতে পারছেন তাদের তালিকা করে খুঁজে বের করে গোপনে গোপনে ঘরে ঘরে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী কিংবা নগদ অর্থ পৌছিয়ে দিয়ে আসছেন নৌকার সর্মথক গোষ্ঠীর কর্মী সমর্থকরা।অনেকটা নিরবে থেকেই বিভিন্ন এলাকার দিনমজুর, শ্রমিক, অসহায় ও দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছেন তিনি। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই তিনি বিভিন্নভাবে আওয়ামী সরকারের বার্তা প্রচার করতে মাঠে নামেন এবং সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তার সমর্থিত নৌকার সর্মথক গোষ্ঠীর নেতাকর্মীরা মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছে এই প্রচার বিমুখ সেবকের উপহার।কিছু জনপ্রতিনিধি যখন সমাজের অসহায় গ্রস্ত ঘরমুখী মানুষের ত্রাণ চুরি করছে, এক টাকার সহযোগিতা শত টাকার প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত,ঠিক তখনই আবির্ভাব ঘটে এই তরুণ সমাজ সেবকদের। তিনি সমাজপতি ও বিত্তবানদের আহ্বান জানান আসুন এই দুঃসময়ে জাতির ক্রান্তিলগ্নে সমাজের অসহায় মানুষগুলোর পাশে সম্মিলিতভাবে সহযোগিতা করি, “নিজের প্রচারণা নয় চলুন সরকারের প্রচারণা করি, মানবিক রূপের বিকাশ ঘটায়।
ডিটেকটিভ/২৮ মে ২০২০/ইকবাল